নিজস্ব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের কমিরগঞ্জের নেয়ামতপুরে অবস্থিত জেসি এগ্রো ফার্ম। ফার্মটির বয়স প্রায় তিন বছর। বর্তমানে জেসি এগ্রোতে দেশিজাত ছাড়াও ব্রাহামা, শাহীওয়াল, হারিয়ানা, গয়াল, নেপালি, ইন্ডিয়ান প্রায় ২৫০টি গবাদি পশু রয়েছে। খামারে ৩০০টি পশু যার মধ্য ২০ টি মহিষও রয়েছে রয়েছে। এখানে লাল, খয়েরি, সাদা ও কালো রঙের বিভিন্ন জাতের ষাড় রয়েছে। এগুলো প্রায় ছয় মাস থেকে আঠার মাস ধরে পোষা হচ্ছে।
উদ্যোক্তা এরশাদ উদ্দিন জানান, ঈদে ৩০০টি গরু- মহিষের মধ্যে প্রায় দুইশতটি পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সর্বনিন্ম ৭৫ হাজার টাকা থেকে ৬লক্ষ টাকা দামের গরু মহিষ রয়েছে। সিন্ধি, হলেষ্টিয়ান ব্রাহামা, হারিয়ানা, শাহীওয়াল, দেশাল সহ বিভিন্ন জাতের গরুর পাশাপাশি মহিষের মধ্য আলভিনো ও মুররা রয়েছে। পশু পালনের প্রধান শর্ত খাদ্য খরচ কমানো। আমি আমার খামারে প্রাকৃতিক পরিবেশে অর্গানিক খাবারের মাধ্যমে এই পশুগুলোকে লালন পালন করে আসছি।
ভুট্টা চাষ করে আমি প্রতি কেজি খাবার ৩-৫ টাকায় দিতে পারছি কিন্তু বাজার থেকে এই খাবার ক্রয় করতে গেলে কেজি প্রতি ২০-২৫ টাকা খরচ পড়ে। তিনি জানান, কোরবানির জন্য সুস্থ, সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান অর্গানিক খাবারে গড়ে তোলা পশুর চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। এ কথা চিস্তা করেই জেসি এগ্রো ফার্মের যাত্রা। এবারের কোরবানির ঈদে ৩০০টি গরু- মহিষের মধ্যে প্রায় দুইশতটি পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। সর্বনিন্ম ৭৫ হাজার টাকা থেকে ৬লক্ষ টাকা দামের গরু মহিষ রয়েছে। সিন্ধি, হলেষ্টিয়ান ব্রাহামা, হারিয়ানা, শাহীওয়াল, দেশাল সহ বিভিন্ন জাতের গরুর পাশাপাশি মহিষের মধ্য আলভিনো ও মুররা রয়েছে। আশা করছি গত বারের মতো অনলাইনেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অগ্রিম বিক্রির জন্য ভালো সাড়া পাব। আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে খামারের পশু বিক্রি করে ইনশাঅল্লাহ কোটি টাকা মুনাফা হবে।
উদ্যোক্তা এরশাদ উদ্দিন বেকার যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকুরির পিছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। আমিও বলব শিক্ষিত বেকার যুবকেরা যেন চাকুরির পিছনে না ছুটে ছোট আকারে খামার গড়ে তোলেন এতে করে শিক্ষিত যুবকেরা উদ্যোক্তা হয়ে উঠবেন। এতে নিজে লাভবান হওয়ার পাশপাশি মানুষের কর্মসংস্থানও করা সম্বব। হাতে কলমে প্রশিক্ষনের জন্য শিক্ষিত বেকার যুবকদের প্রয়োজনে ট্রেনিং করাতে এবং আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বেকারদের যথাসাধ্য চেষ্টা করব। খামারটিতে ভুট্টা দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি প্রাকৃতিক খাবার, সাইলেজ খেতে দেওয়া হয় গবাদি পশুদেরকে।
কৃষকদের কাছ থেকে গাছসহ ভুট্টা কিনে খামারেই বানানো হয় এ পশুখাদ্য। ফলে এসব প্রাণি লালনপালনেও খরচ পড়ছে ৩-৫ টাকা যা বাজারের খাবরে দামের চাইতে কেজি প্রতি ১৫-২০ টাকা কম। স্থানীয় এলাকার কয়েকজন শিক্ষত যুবকেরা জানান, এই খামার দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন তারা। অনেকে খামার পরিদর্শন করে কীভাবে শুরু করা যায়, তারও পরামর্শ গ্রহণ করেছেন।
খামারে স্থানীয় প্রায় এক ডজন যুবকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া এলাকায় আগে ভুট্টা চাষ তেমন হতো না, এখন পশু খামারকে ঘিরে কৃষকরা ভুট্টা চাষেও আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে খামারটি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, খুব সুন্দর খামারটি একটি খামার। আমাদের পক্ষ থেকে খামারের সার্বিক খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।
পাশাপাশি খামারের কর্মীদেরকেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অর্গানিক পদ্ধতিতে দেশীয় শংকরজাতের গরু-মহিষ লালনপালন লাভজনক। পাশাপাশি এগুলোর মাংসও মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে নিরাপদ।